বেদের কল্কি অবতার এবং নবী মোহাম্মদ (সঃ)
শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে হিন্দুদের ধর্ম গ্রন্থ বেদে নবী মোহাম্মদ (সঃ) সম্পর্কে যতগুলো ভবিষ্যৎবাণী করা হয়েছে, তা আর অন্য কোনো ধর্মগ্রন্থে এতটা করা হয়নি। আসুন দেখি বেদ এবং তার বিশেষজ্ঞগণ কি বলেন।
kalkiavatar
হিন্দু ধর্মের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. বেদপ্রকাশ উপাধ্যায় তার কল্কি অবতার এবং মোহাম্মদ সাহেব গ্রন্থে বেদকে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলেন,
১। “হোতার মিন্দ্রো হোতার মিন্দ্রো মহাসূরিন্দ্রাঃ
অল্লো জ্যেষ্টং শ্রেষ্ঠং পরমং ব্রহ্মণং অল্লাম ॥
অল্লো রসূল মোহাম্মদ রকং বরস্য অল্লো অল্লাম।
আদাল্লাং বুকমেকং অল্লাবুকং লিখর্তকম।”
অর্থ: দেবতাদের রাজা আল্লাহ আদি ও সকলের বড় ইন্দ্রের গুরু। আল্লাহ পূর্ণ ব্রহ্ম, মোহাম্মদ আল্লাহর রাসূল পরম বরণীয় আল্লাহ আল্লাহ। তাঁহার অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ আর কেহ নাই। আল্লাহ অক্ষয় অব্যয় স্বয়ম্ভু।
(কল্কি অবতার এবং মোহাম্মদ সাহেব-২৩)
২। হিন্দুধর্মের শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ সংস্কারক শ্রীশ্রী বালক ব্রহ্মচারী সামবেদে শ্রীকৃষ্ণের নাম-গন্ধও নাই বলে উল্লেখ করেছেন। সেখানে যার নাম আছে তাঁর নাম
‘‘মদৌ বর্তিতা দেবাদ কারান্তে  প্রকৃত্তিতা ।
বৃষানাং ভক্ষয়েৎ সদা মেদা  শাস্ত্রেচ স্মৃতা। ”
যে দেবের নামের প্রথম অক্ষর ‘ম’ ও শেষ ‘দ’ এবং যিনি বৃষমাংস ভক্ষণ সর্বকালের জন্য পূর্ণ বৈধ করিবেন তিনিই হইবেন বেদানুযয়ী ঋষি”মোহাম্মদ  -এর নামের প্রথম ও শেষ অক্ষর বেদের নির্দেশ যথাক্রমে ‘ম’ ও ‘দ’ হওয়াতে তাঁকে  মান্যকরাও শাস্ত্রেরই নির্দেশ।
(কল্কি অবতার এবং মোহাম্মদ সাহেব-২৩)
৩।
“লা-ইলাহা হরতি পাপম ইল্ইলাহা পরম পাদম,
জন্ম বৈকুণ্ঠ অপ ইনুতি  ত জপি নাম মুহম্মদ ”
অর্থ: লা-ইলাহার আশ্রয় ছাড়া পাপ মুক্তির কোনো প্রকৃত আশ্রয় নাই। বৈকুণ্ঠে জন্ম লাভের আশা করিলে ইলাহর আশ্রয় নেয়া ছাড়া কোনো গতি নাই। আর এ জন্য মুহাম্মাদ  -এর প্রদর্শিত পথের অনুসরণ ও অনুকরণ একান্তই অপরিহার্য।
(কল্কি অবতার এবং মোহাম্মদ সাহেব-২২)
৪।
অল্লো রসুল  মহম্মদ রকং বরস্য। ”
স্মিন্নস্তিদরে ম্লেচ্ছ আচার্যেন সমন্বিতঃ।
মহামদ ইতখ্যাতঃ শিষ্যশাখা সমম্বিতঃ।
নৃপশ্চৈব মহাদেবং মুস্থল নিবাসিনম।
চন্দনাদিভির ভ্যার্চ্য তুষ্টার মনসা র্হম।
নমস্তে গিরিজানাথ মুরুস্থল নিবাসিনম।।
ত্রিপুরাসুনাশায় বহুমায়া প্রবর্তিনে।।
ম্লেচ্ছৈর্গপ্তায় শুদ্ধায সচিছাদানন্দরুপিণে।
‘যথাসময়ে ‘মহাম্মদ’ নামে একজন মহাপুরুষ আবির্ভূত হইবেন যাহার  মরুস্থ  (আরব দেশে) সাথে স্বয় সহচরবৃন্দও থাকিবেন। হে মরুর প্রভু! হে জগতগুরু! আপনার প্রতি আমাদের স্তুতিবাদ। আপনি জগতের সমুদয় কলুষাদি ধ্বংসের উপয় অবগত আছেন। আপনাকে প্রণতি জানাই। হে মহাত্মা! আমরা আপনার দাসানুদাস। আমাদেরকে আপনার পদমূলে আশ্রয় প্রদান করুন।
(কল্কি অবতার এবং মোহাম্মদ সাহেব-২৪)
এবার আসি বেদের কথায়,
হিন্দুধর্মের পরিভাষায় রসূলকে অবতার বলা হয়। সামনে আমরা অবতার নিয়েই আলোচনা করবো। ঈশ্বরের পক্ষ থেকে যাকে অবতীর্ণ করা হয় তাকেই অবতার বলা হয়। সে হিসেবে যিনি সর্ব শেষে আসবেন তাকেই অন্তিম অবতার বলাহয়। অন্তিম অর্থ শেষ এবং অবতার অর্থ রাসূল অর্থাৎ শেষ রাসুল।
হিন্দুধর্মে যুগ চারটি
সত্য, ত্রেতা, দাপর, কলি।
কলিযুগের শেষ অবতার যাকে আমাদের পরিভাষায় শেষনবী বলি সেই কল্কি অবতারের নাম পিতার নাম, জন্মস্থান ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা আপনাদের ধর্মীয় গ্রন্থে পাওয়া যায়, আপনারা যার অপেক্ষা করছেন, এগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় সকল মানুষের নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রমাণিত হয়। নিম্নে তার বর্ণনা দেয়া হলো।
অন্তিম অবতারের নাম
অন্তিম অবতার বা শেষ রাসূলের নাম হবে ‘নরাশংস’।
“নরাশংসং সৃধৃষ্টমমপশ্যং সপ্রথস্তমং দিবো ন সদ্মম খস॥ ৯
(ঋগে¦দ ১/১৮/৯)
আমরা একটু বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, ‘নরাশংস’ সংস্কৃত ভাষা। যার বাংলা অর্থ হয় ‘প্রশংসিত ব্যক্তি’। যার আরবী অর্থ হয় ‘মুহাম্মদ’। আর সকল মানুষের সর্ব শেষ নবীর নাম হলো মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
অন্তিম অবতারের পিতার নাম
অন্তিম অবতারের পিতার নাম হবে ‘বিষ্ণযশা’।
‘‘সুমত্যাং বিষ্ণুযশসা গর্ভমাধত্ত বৈষ্ণবম্।’’
(কল্কি-পুরান-১/২/১১)
এর বিশ্লেষণ করলে দেখাযাবে, ‘বিষ্ণযশা’ শব্দটি সংস্কৃত ভাষা। যার বাংলা অর্থ হয়, ‘মালিকের দাস’। যার আরবী অনুবাদ হয়‘ আবদুল্লাহ’।
আর সর্ব শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লামের পিতার নাম ছিল আবদুল্লাহ।
অন্তিম অবতারের মাতার নাম
অন্তিম অবতারের মাতার নাম সম্পর্কে কল্কি পুরানে লিখা আছে যে, তার নাম হবে ‘সুমতি’।
‘‘সুমত্যাং মাতরি বিভো। কন্যায়াংত্বন্নিদেশত:।।”
(কল্কিপুরাণ-১/২/৪)
এর বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, ‘সুমতি’ শব্দটি সংস্কৃত ভাষা।
যার বাংলা অর্থ হয় ‘নিরাপদ-শান্তি’।
যার আরবী অনুবাদ হয় ‘আমেনা’। আর সর্ব শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাতার নাম ছিল আমেনা।
অন্তিম অবতারের জন্মস্থান
অন্তিম অবতারের জন্মস্থান সম্পর্কে কল্কি পুরানে লেখা আছে, তিনি জন্ম গ্রহণ করবেন , ‘শম্ভল’ নামক স্থানে।
‘‘শম্ভলে বিষ্ণুযশসো গৃহে প্রদুর্ভবাম্যহম।’’
(কল্কিপুরাণ-১/২/৪)
এর বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, ‘শম্ভল’ শব্দটি সংস্কৃত ভাষা। যার বাংলা অর্থ হয়, ‘শান্তির স্থান’। যার আরবী অনুবাদ হয়‘ বালাদুল আমিন’। আর মক্কা মুকাররমার নাম হলো, বালাদুল আমিন। আর মুহাম্মদ সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কায় জন্মগ্রহণ করেছেন।
অন্তিম অবতারের জন্ম তারিখ
অন্তিম অবতার ‘মাধব মাসের শুক্ল পক্ষের দ্বাদশ তারিখে জন্মগ্রহণ করবেন।’
‘‘দ্বাদশ্যাং শুক্লপক্ষস্য মাধবে মাসি মাধবঃ।”
(কল্কিপুরাণ-১/২/১৫)
মাধব অর্থ বৈশাখ মাস, বিক্রমী ক্যালেন্ডার মতে বৈশাখকে বসন্তের মাস বলা হয়, যার আরবী অর্থ হয় ‘রবি’।
শুক্ল পক্ষ, অর্থাৎ ‘প্রথম অংশ’ যার আরবী অনুবাদ হয়, ‘আউওয়াল’। একত্রে হয় ‘রবিউল আউওয়াল’ দ্বাদশ তারিখ অর্থাৎ ১২ তারিখ।
আর সর্বশেষ সকল মানুষের নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘রবিউল আউওয়াল মাসের ১২তারিখে জন্মগ্রহণ করেছেন।
অন্তিম অবতারের গুণাবলী
হিন্দু ধর্মগ্রন্থে অন্তিম অবতারের যেসব গুণাবলী বর্ণনা করা হয়েছে, সবগুলো গুণ সর্ব শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে মিলে যায় । যেমন-
১.মিষ্টভাষী (বা বাণীর মাধুর্য)
ঋগে¦দে নরাশংসকে মধুজিহ্বা (মধুর ভাষী, মিষ্টভাষী বা মধুকন্ঠী) বলে অবিহিত করা হয়েছে।
“মধুজিহ্বৎ হবিস্কিৃকতম্”
অর্থাৎ তাঁর বাণী (ভাষা) হবে মধুর।
(ঋগে¦দে ১/১৩/৩)
পক্ষান্তরে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি বড় গুণ ছিল যে তাঁর ভাষা ছিল খুবই মিষ্ট ও সুমধুর।
(তিরমিজী শরিফ)
২. অপার্থিব বিষয়ের জ্ঞানী
অন্তিম অবতার নরাশংসকে অপার্থিব জ্ঞানের অধিকারী বলে অভিহিত করা হয়েছে। এই জ্ঞনের অধিকারী ব্যক্তিত্বদের  কবি বলে অভিহিত করা হয়।
‘‘নরাশংসঃ সুসুদতীমং যজ্ঞমদাভ্যঃ।
কবির্হি মধুহস্ত্যঃ।।”
(দেখুন ঋগে¦দের ৫/৫/২মন্ত্রে। )
আর আল্লাহ তাআলা হযরত মুহাম্মাদ  সাল্লাল্লহু আলাইহিওয়া সাল্লাম কে কিছু কিছু ব্যাপারে অপ্রত্যক্ষ বা অপার্থিব জগতের জ্ঞান দান করেছিলেন। যেমন- হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লহু আলাইহিওয়া সাল্লাম রোমক ও পারসিকদের মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধে রোমানদের পরাজয় এবং নয় বছরের মধ্যে রোমানদের বিজয়ের আগ সংবাদ দিয়েছিলেন। নাইনাওয়ার যুগে রোমানরা ৬৫৭ খ্রিস্টাব্দে জয়লাভ করেছিল। পবিত্র কুরআনের সূরা রুম এরই সাথে সম্পর্কিত। এ ধরনের বহু ঘটনা হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সিরাত অধ্যয়নে জানা যায়।
৩. অপূর্ব দৈহিক সৌন্দর্যের অধিকারী
নরাশংসকে অপূর্ব সৌন্দর্যের অধিকারী বলে অভিহিত করা হয়েছে। এই বিশেষত্বের বর্ণনার প্রথমে ঋগে¦দে ‘স্বর্চি’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থাৎ সুন্দর বা দিব্যকান্তিযুক্ত।
“নরাশংসঃ প্রতি ধামান্যঞ্জুন তিস্রোদিবঃপ্রতি মহা স্বর্চি।।”
(দেখুন, ঋগবেদেও ২/৩/২মন্ত্রে।)
এর তাৎপর্য হলো, এমন অপরূপ সৌন্দর্যের অধিকারী যাঁর চেহারা থেকে আলোক বিচ্ছুিরত হয়। ঋগে¦দে আরও বলা হয়েছে যে, তিনি ঘরে ঘরে আপন মহত্ম্যেরআলোকদ্যুতি পৌঁছে দিবেন
‘‘ঘৃত প্রƒষা মনসা হব্যমূন্দন্মুর্ধনযজ্ঞস্য সমনক্তু দেবান ॥”
(দেখুন, ঋগে¦দের ২/৩/২মন্ত্রে।)
উল্লেখ্য যে, হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষের ঘরে ঘরে জ্ঞানের আলো জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন। অজ্ঞতার অন্ধকার বিদূরিত করেছিলেন এবং অন্ধকার (জাহিলিয়াত) থেকে মানুষকে আলোর পথে নিয়ে  এসেছিলেন।
৪.পাপ নিবারক
ঋগে¦দে নরাশংসকে জনসাধারণের পাপ থেকে নিবৃত্তকারী’ বলে অবিহিত করা হয়েছে।
“রথংন দুর্গাদ্বসবঃ সুদানবো বিশ্বস্মান্নো (অংসো) নিস্পিপর্তন।।”
(ঋগবেদে  ১/১০৬/৪)
একথা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আমাদের নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সমস্ত শিক্ষা তাঁর উপর অবতীর্ণ কুরআন একটি পাপকর্মহীন জীবনের সন্ধান দিয়েছে। এ হলো সৎ পথের একটি আয়না। যার নির্দেশনা সব রকমের পাপাচার থেকে  মুক্তির উৎস।
৫. নরাশংস এর ১২ জন পতœী থাকবে
“ম্মা রথস্য নি জিহীহতে দিব ঈশনাস উপস্পৃশ রন ”
অর্থাৎ যিনি বারো পতœী সমভিব্যহারে উটের পিঠে আরোহণ করেন ।
(অথর্বদের কুন্তাপ সূক্ত ৩১/২)
একথা সত্য যে, আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এর বারোজন স্ত্রী ছিলো।
৬.ঘোড়ায় আরোহণ করে সপ্ত আকাশ ভ্রমণ করবেন
শ্রীমদ্ভাগবদ পুরাণে আছে, কল্কি অবতার অশ্বপৃষ্ঠে ভ্রমণ করে পৃথিবী ও সপ্তস্বর্গ ভ্রমণ করবেন।
অশ্বমাগুগমারুহ্য দেবদত্তং জগৎপতিঃ।
অসিনাসাধুদমনমষ্টৈশ্বর্যগুণান্বিতঃ।। ১৯
(ভগবত পুরাণ ১২স্কন্দ ২অঃ১৯মন্ত্র)
হযরত মুহাম্মদ   ও অশ্বপৃষ্ঠে (বোরাক) সপ্ত আকাশ পরিভ্রমণ করে মহান আল্লাহর দিদার লাভ করেন।
৭. গুপ্তাঙ্গের অগ্রভাগ ছেদিত হবে (খতনাকৃত হবে)
ভগবত পুরাণে আছে কল্কি অবতারের গুপ্তাঙ্গেও অগ্রভাগ ছেদিত থাকবে অর্থাৎ খতনাকৃত থাকবে।
বিচরন্নাশুনা ক্ষোণ্যাং হয়েনাপ্রতিমদ্যুতিঃ।
নৃপলিঙ্গচ্ছদো দস্যূন্ কোটিশো নিহনিষ্যতি।। ২০
(ভগবত পুরাণ ১২স্কন্দ ২অঃ২০মন্ত্র)
অর্থাৎ তিনি বেগবান অশ্বে বিচরণকারী, অপ্রতিম, কান্তিময়, গুপ্তাঙ্গের অগ্রভাগ ছেদিত, রাজবেশে অসংখ্য গুপ্ত দস্যুকে সংহার করবেন।
উল্লেখ্য যে, হযরত মুহাম্মদ   এর গুপ্তাঙ্গের অগ্রভাগ ছেদিত ছিল। তিনিও রাষ্ট্রপ্রধান হন এবং বিভিন্ন রণাঙ্গনে অসংখ্য গুপ্তশত্র“কে হত্যা করেন।
৯. চার সঙ্গীর সহিত করি দমন
কল্কি পুরাণে উল্লেখিতাছে যে, কল্কি অবতার তাঁহার চারজন সঙ্গীর নিয়ে কলি অর্থাৎ শয়তানকে নিবারিত  করবেন।
চতুর্ভি ভ্রাতৃভির্দের করিতামি কলিক্ষয়াম
(কল্কি পুরাণ, ২য় অধ্যায়, ৫ম শ্লোক)
তদ্রƒপ হযরত মুহাম্মদ   তার সহচরগণের সহিত শয়তানকে নিবারিত করেছেন। সেই চারজন একান্ত অনুগত সহচরগণ হলেনÑ (১) হযরত আবুবকর রা. (২) হযরত উমর রা. (৩) হযরত উসমান রা. ও (৪) হযরত আলী রা.।
১০. জগত গুরুভাগবত
পুরাণে কল্কি অবতারকে ‘জগতপতি’ বলা হয়েছে। যিনি উপদেশাবলী দ্বরা নিপাতী পৃথিবীকে উদ্ধার ও রক্ষা করেন, তাঁকে জগতপতি বলা হয়। তিনি নির্দিষ্ট কোনো জাতির গুরু নহেন, তিনি হলেন সমগ্র বিশ্বের গুরু। এই দৃষ্টিকোণে দেখা যায় যে, কুরআনে হযরত মুহাম্মদ সাললাহু আলাইহি ওয়া সাললামকে সমগ্র বিশ্বের নবী ঘোষণা করা হয়েছে।
১১.অল্পভাষণ
অন্তিম অবতারের বড় একটি গুণ হলো তিনি সল্পভাষী হবেন। এদিকে আমাদে শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সল্পভাষী ছিলেন।
১২.দান
অন্তিম অবতার দানবীর হবেন। একথা স্পষ্ট যে, আমাদের শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দানবীর ছিলেন। তাঁর কাছে কেউ কিছু চাইলে ফিরিয়ে দিতেন না এবং সাথীদের দানের জন্যও উৎসাহিত করতেন।
১৩. ঐশ্বরীক বাণী দ্বারা  আদিষ্ট হওয়া
কল্কি অবতার সম্পর্কে ভারতে ইহা প্রসিদ্ধ আছে যে, তিনি বৈদিক ধর্ম অর্থাৎ ঈশ্বরীয় ধর্ম প্রতিষ্ঠা করিবেন। তিনি মানবজাতিকে ঈশ্বর হতে প্রাপ্ত শিক্ষা দিবেন। হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর ঈশ্বরের নিকট হতে যে কুরআন অবতীর্ণ হয়ে ছিল, তা অমর সত্য। কুরআনে সুমহান নীতি, সদাচার, বিশ্বপ্রেম, একেশ্বরবাদ এবং মহৎ আদেশসমূহ বর্ণনা করা হয়েছে । প্রাচীন বেদগ্রন্থেও উহার সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়।
এই ভাবে আমরা কল্কি অবতার এবং হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাঝে প্রতিটি ক্ষেত্রে পূর্ণসাদৃশ্য ও সামাঞ্জস্য দেখতে পাই।
১৪. দেবতা কর্তৃক সহায়তা
কল্কি পুরাণে উল্লেখ আছে যে, যুদ্ধক্ষেত্রে দেবতাগণ কল্কি অবতারকে সহায় করবেন। এরূপ ঘটনা হযরত মুহাম্মদ  -এর জীবনে ‘বদর’  নামক যুদ্ধে বাস্তবে পরিণত হয়।
অথর্ববেদে হযরত মুহাম্মদ   এর প্রসঙ্গ
{অথ কুন্ডাপ সুক্তানি}
ইদংজনা উপশ্র“ত নরাশংস স্তবিষ্যতে।
ষষ্টিং সহস্রা নবতিং চ কৌরম আ রুশমেষু দদ্মহে।। ১
উষ্ট্রা যস্য প্রবাহণ্যে বধমন্তো দ্বির্দশ।
বর্ষ্মা রথস্য নি জিহীড়তে দিব ঈষমাণা উপস্পৃশঃ।।২
এষ ইষায় মামহে শতং নিষ্কাশ দশ স্রজঃ।
ত্রীণি মতান্যর্বতাং সহ্রসা দশ গোনাম।।৩
বচ্যস্ব রেভ বচ্যস্ব বৃক্ষে ন পক্কে শকুনঃ।
নষ্টে জিহ্বা চর্চরীতি ক্ষুরো ন ভূরি জোরিব।।৪
প্র রেভাসো মণীষ্য বৃষা গাব ইবেরতে।
আমোত পুত্রকা এষামমোত গা ইবাসতে।।৫
প্র রেভ ধীং ভরস্ব গোবিন্দুং বসুবিদম্।
দেবত্রেমাং বাচং শ্রীণীহীষুণাবীরস্তারম।।৬
রাজ্ঞো বিশ্বজনীনস্য যো দেবোহমর্ত্যা অতি।
বৈশ্বানরস্য সুষ্টুতিমা সুনোতে পরিক্ষিতঃ।।৭
ঈরিচ্ছিন্নঃ ক্ষেমমকরেনৎ তম আসনমাচরন।
কুলায়ন কৃন্বন কৌরব্যৎ পতির্বদতি জায়য়া।।৮
কতরৎ ত আ হরাণি দধি মন্থাং পরিশ্র“তম।
জাযাঃ পতিং বি পৃচ্ছাতি রাষ্ট্রে রাজ্ঞঃ পরিক্ষিতঃ।।৯
অভীবস্বঃ প্র জিহীতে যবঃ পক্বঃ পথো বিলম।
জনঃস ভদ্রমেধতি রাষ্ট্রে রাজ্ঞঃ পরিক্ষিতঃ।।১০
ইন্দ্র কারুমবধদুত্তিষ্ঠ বি চরাা জনম।
এমেদু গ্রসৗ চর্কিৃধ সর্ব ইৎ তে পৃণাদরিঃ।।১১
ইহ গাবঃ প্রজায়ধ্বমিহাশ্বা ইহ পুরুষাঃ।
ইহো সহস্রদক্ষিণোহণি পূষা নি ষীদতি।।১২
নেসা ইন্দ্র গাবো রিষন মো আসাং গোপ রীরিযৎ।
মাসমত্রিয়ুর্জন ইন্দ্র মা স্তেন ঈশত।।১৩
উপ নো ন রমসি সুক্তেন বচসা বয়ং ভদ্রেণ বচসা বয়ম।
ঊনাদধিধ্বনো গিরো ন রিষ্যেম কদাচন। ।১৪
(অথর্ববেদ ২০শ কাণ্ড ৯ম অনুবাক ৩১শ সুক্ত)
১ম মন্ত্রে যে ঋষির প্রশংসা গীত হয়েছে তার নাম নরাশংস। নরাশংস অর্থ প্রশংসিত, প্রশংসা।
(ক) ‘কৌরম’ অর্থ দেশত্যাগী। ইহা উক্ত ঋষির দ্বিতীয় পরিচয়। মন্ত্রে উক্ত হইয়াছে যে, দেশত্যাগী ব্যক্তিকে ষাট হাজার নব্বই ব্যক্তির মধ্যে দৃষ্ট হইতেছে। আমরা ইতিহাসে দেখিতে পাই যে, হযরত মুহাম্মদ -এর যুগে আরব দেশের লোক সংখ্যা ছিল প্রায় ষাট হাজার।
আরো দেখা যায় যে, হযরত মুহাম্মদ   তাঁহার মাতৃভূমি মক্কা ত্যাগ করিয়া মদীনায় চলিয়া যান এবং সমগ্র আরব দেশের ষাঠ হাজার মানুষ তাঁহার সঙ্গে বৈরিতা পোষণ করে।
সুতরাং নরাশংস-প্রশংসিত; কৌরম-দেশত্যাগী, উভয় বিষয় হযরত মুহাম্মদ  -এর মধ্যে পরিপূর্ণভাবে  প্রযোজ্য হইতেছে।
২য় মন্ত্র: এই মন্ত্রে উক্ত ঋষির তিনটি পরিচয় প্রদত্ত হইয়াছে।
(ক) উষ্ট্রে আরোহণকারী হইবেন-
এত দ্বারা সুষ্পষ্টভাবে ব্যাক্ত হয় যে, (১) ভবিষ্যতে আগমনকারী ঋষি মরুভূমি দেশের অধিবাসী হইবেন এবং (২) তিনি ভারত বহির্ভূত অহিন্দু জাতী হইতে আবির্ভূত হইবেন। কারণ উট মরুদেশ ছাড়া পাওয়া যায় না এবং হিন্দু ব্রাহ্মণের জন্য মসুুস্মৃতিতে উটে আরোহণ নিষিদ্ধ করা হইয়াছে। (১১ঃ২০১)। এমনকি মনুসংহিতায় উটের দুধ ও মাংস খাওয়াও নিষিদ্ধ করা হইয়াছে (৫ঃ৮, ১১ঃ১৫৭)।
(খ) তাঁহার একাধিক স্ত্রী থাকিবেন।
(গ) তিনি রথে চড়িয়া উর্ধ্বাকাশে ভ্রমণ করিবেন।
এই তিনটি পরিচয়ও হযরত মুহম্মদ  -এর সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে প্রযুক্ত হয়। তিনি মরুভূমি আরব দেশের অধিবাসী ছিলেন, তিনি জীবনব্যাপী উটে আরোহণ করেন। তাঁহার একাধিক স্ত্রী  ছিল এবং তিনি ঐশীবাহন বোরাকে চড়িয়া সপ্ত আকশে স্বর্গসমূহে ভ্রমণ করেন, যাহা ‘মিরাজ’ নামে খ্যাত।
৩য় মন্ত্র: (ক) এখানে উক্ত ঋষির আর একটি নাম দেওয়া হইয়াছে তাহা  হইল মামহ। ‘মামহ’ সংস্কৃত নয় উহা বিদেশী শব্দ। মামহ আসলে আরবী মহাম্মদ এর সংস্কৃত রূপ।
ঋগে¦দে ৫ম মণ্ডল ২৭ সুক্ত ১ম মন্ত্রে-ও মামহ ঋষির উল্লেখ আছে।
(খ) উক্ত ঋষিকে একশত স্বর্ণমুদ্রা, দশটি হার, তিন শত অশ্ব এবং দশ সহস্র গাভী প্রদত্ত হইবে।
স্বর্ণমুদ্রা, হার, অশ্ব ও গাভী-এইগুলো পার্থিব ব্যবহৃত হইতে পারে না। কারণ এই সকল পার্থিব বস্তু লাভের দ্বারা কোনো ঋষির মাহাত্ম্য প্রকাশ পায় না, বরং তাহার পার্থিব-কলুষতাই প্রকাশ করে। প্রকৃতপক্ষে এইগলো অলঙ্কারিক অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে। তাহার শিষ্যগণের মধ্যে আধ্যাত্মিকতা ও ধার্মিকতার ক্ষেত্রে একশত জন স্বর্ণমুদ্রা স্বরূপ, দশজন সততা ও মনব কল্যাণের প্রতীক গাভী স্বরূপ হইবেন।
হযরত মুহাম্মদ   এর শিষ্যগণের একশত জন সংসার ত্যাগী ও আল্লাহতে সমর্পিত প্রাণ ছিলেন, যাহারা ইতিহাসের ‘আসহাবে সুফফা’ নামে খ্যাত ছিলেন। দশজনকে তাঁহাদের ধর্মে চরম সফলাতা লাভের জন্য এই ইহজীবনেই স্বর্গ-লাভের সুসংবাদ দেওয়া হয়। তাহারা ‘আশারায়ে মোবাশ্বারাহ’ (সুসংবাদ প্রাপ্ত দশজন) নামে খ্যাত।
হযরত মুহাম্মদ   জন্মভুমি মক্কা ত্যাগ করিয়া মদীনায় আসেন। কিন্তু মক্কার বিপক্ষগণ ৩০০মাইল দূরে মদীনা আক্রমণ করার উদ্দেশে একহাজার সৈন্যসহ আগমন করেন। হযরত মুহাম্মদ   তাঁর তিনশত শিষ্যসহ তাহাদের মোকাবিলা করেন এবং সেই তিনশতের বীরত্ব ও বিক্রমে বিপক্ষের একহাজার সৈন্য পরাজিত হয় এবং তাহাদের সত্তর জন নিহত ও সত্তর জন বন্দী হয়। এই জন্য উক্ত তিনশত জনকে ধর্মের  ক্ষেত্রে অশ্ব উপাধি দান করা হয়। যাহারা ইতিসাসে ‘বদরী সাহাবা’ নামে খ্যাত আছেন।
হযরত মুহাম্মদ   অষ্টম হিজরীতে দশ হাজার শিষ্যসহ মক্কাভিমুখে রওনা হন। মক্কাবাসীগণ সামান্য প্রতিরোধ করার পর নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করে। হযরত মুহাম্মদ   তাহাদের প্রতি নিঃশর্ত ক্ষমা প্রদর্শন করিলে তাহার দশহাজার শিষ্য-সৈন্যও সকলের প্রতি উদার ব্যবহার করেন। এইজন্য  তাহাদিগকে গাভীর ন্যায় কল্যাণের প্রতীকরূপে চিহ্নিত করা হইয়াছে। ইতিহাসে এই ঘটনাকে ‘মক্কাবিজয়’ নামে অভিহিত করা হইয়াছে।
অতএব মন্ত্রের  এইরূপ সুসামঞ্জস্য হযরত মুহাম্মাদ   কেই নির্দেশ করিয়াছে।
৪র্থ মন্ত্র: এখানে বলা হইয়াছে, হে রেভ সত্য প্রচার কর।
বেদের হিন্দু ভাষ্যকার ‘রেভ’ এর অর্থ করিয়াছেন যিনি প্রশংসা করেন তথা প্রশংসাকারী। অর্থাৎ রেভ দ্বারা এমনর ঋষিকে সম্বোধন করিয়া সত্য প্রচার করার ঐশী আদেশ দেওয়া হইয়াছে, যাহার নামের অর্থ প্রশংসাকারী।
আহমদ অর্থ প্রশংসাকারী। রেভ উহার সংস্কৃত শব্দ।
কুরআনের তাহাকে আদেশ দেওয়া হইয়াছে ‘‘আপনার প্রভুর নিকট হইতে আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয় তাহা প্রচার করুন। ”
৫ম মন্ত্র: এখানে মক্কা বিজয়ের বর্ণনা দেওয়া হইয়াছে। প্রশংসাকারীর দল প্রভুর প্রশংসা করিতে করিতে চলিয়াছেন আর তাহাদের সন্তানগণ গৃহে তাহাদের  প্রত্যাবর্তনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করিতেছে।
৬ষ্ঠ মন্ত্র: এখানে রেভ ঋষিকে জ্ঞানময় স্তোত্র। (প্রশংসাগীতি) ধারণ করিয়া মানুষের মধ্যে তীরন্দাজের ন্যায় সুনিপুণভাবে প্রচার করিতে আদেশ করা হইয়াছে।
হযরত মুহাম্মদ  -এর উপর অবতীর্ণ কুরআনকে ‘হকীম’ জ্ঞানময় গ্রন্থ বলা হইয়াছে। আশ্চর্য বিষয় যে, কুরআনের প্রথম সুরাটিও প্রভুর প্রশংসা দ্বারা আরম্ভ হইয়াছে। “সমস্ত সৃষ্টি জগতের সৃষ্টিকর্তা ভ্রভু আল্লাহর সকল প্রশংসা, যিনি অনন্ত করুণাময় পরম দয়ালু। (সুরা ফাতিহা)
৭ম মন্ত্র: এখানে উক্ত ঋষিকে রাজ ক্ষামতার অধিকারীরূপে চিহ্নিত করা হইয়াছে যে, তিনি রাজ সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হইয় দেশে শান্তি স্থাপন করিবেন। হযরত মুহাম্মদ   ই একমাত্র সেই  ঋষি ব্যক্তি,  যিনি রাজ সিংহাসনের অধিকারী ছিলেন এবং বিশ্বে সমাজ ছিন্নতা ‘অজ্ঞতা’ ও বর্বরতার যুগের অবসান ঘটান এবং সমগ্র আরব তথা বিশ্বে সাম্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করেন। তাহার  প্রতিষ্ঠিত  ধর্ম ইসলাম, যাহার অর্থ হইল শান্তি।
এই মন্ত্রে সেই রাজ-ঋষিকে বিশ্বজনীন বলা হইয়াছে অর্থাৎ তিনি কোনো বিশেষ জাতি বা দেশের ঋষি হইবেন না। বরং তিনি হইবেন বিশ্বনবী এবং তাহার কাছে এমন বিশ্ব রজনীন ঐশী বিধান থাকিবে যাহার সাহায্যে বিশ্বকে শাসন ও পরিচালনা করা সম্ভব  হইবে। এই কষ্ঠিপাথরে যাচাই করিলে একমাত্র হযরত মুহাম্ম    ও তাহার কুরআনই চিহ্নিত হইতে পারে, অন্য কেহ নয়। এই জন্য কুরআনে হযরত মুহাম্মদ   কে বিশ্বনবী এবং কুরআকে বিশ্বজনীন বিধান (রহমাতালীল আলামীন) বলিয়া  ঘোষণা করা হইয়াছে, যা বিশ্ব ইতিহাসের কষ্ঠিপাথরে বাস্তব সত্যরূপে প্রতিষ্ঠিত ও অমর হইয়া আছে।
৮ম ও ৯ম মন্ত্র: এখানেও ঋষিকে রাজরূপে চিহ্নিত করা হইয়াছে, তাহার রাজ্যে এইরূপ শান্তি বিরাজ করিবে যে, একজন কুলবধূর বাজার হইতে নির্ভয়ে দিবা রােিত্র যে কোনো সময় বাজার করিয়া আসিতে সক্ষম।
পৃথিবীর ইতিহাসে একমাত্র হযরত মুহাম্মদ  -এর যুগেই এইরূপ সম্ভব হইয়াছিল। বর্তমান আধুনিক যুগেও যাহা সম্ভব নয়। বর্তমান যুগে দেখা যায় যে, পাশ্চাত্য নারীগণ বাহিরে বহির্গত হওয়ার সময় নিজের নিরাপত্তার জন্য অস্ত্র সঙ্গে নিতে বাধ্য থাকে এবং তজ্জন্য তাহারা অস্ত্র শিক্ষা গ্রহণ করে। অথচ অত্যাশ্চর্য হইলেও সত্য যে, এখনও মক্কায় আযান শ্রবণ করার সঙ্গে সঙ্গে নিজ নিজ গৃহ ও দোকানসমূহ খোলা রাখিয়াই লোকজন মসজিদে নামায পড়িতে ছুটিয়া যান।
১০ম মন্ত্রঃ এখানেও তাহার রাজত্বে শান্তি ও সমৃদ্ধির উল্লেখ করা কহইয়াছে।
১১শ মন্ত্রঃ এখানে ঋষিকে ৪থ মন্ত্রের ন্যায় প্রশাংসাকারী বলা হইয়াছে এবং তাহাকে সর্বত্র ঈশ্বরের প্রশংসা প্রচার করিতে আদেশ দান করা হইয়পাছে।
ইতোপূর্বে ব্যক্ত হইয়াছে যে, হযরত মুহাম্মদ  -এর  নাম আহমদ প্রশংসা কারী।
১২শ ১৩শ মন্ত্র: এখানে উক্ত ঋষিকের রাজত্বে জনমানব ও পশু সকলের উন্নতি ও সমৃদ্ধি ঘটিবে বলা হইয়াছে। হযরত মুহাম্মদ   নেতৃত্বে গঠিত ও পরিচালিত মুসলিম জাতি পৃথিবীতে কত সমৃদ্ধি ও উন্নতি লাভ করিয়াছিল তাহা নিসন্দেহে বিশ্ব ইতিহাসের উজ্জ্বলতম অধ্যায়, এই কথা জাতি ধর্ম নির্বেশেষে সকলেই স্বীকার করিয়া নিয়েছেন।
১৪শ মন্ত্র:  এখানে ঋষিকে বীর যোদ্ধা নামে সম্বোধন  করা হইয়াছে এবং তাহাকে আমাদের প্রশংসা গ্রহণ করিতে অনুরোধ করা হইয়াছে,  তাহাতে আমরা পাপ হইতে রক্ষ লাভ করিতে  পারি।
অতএব, যোদ্ধা ঋষি হিসেব আমরা একমাত্র হযরত মুহাম্মদ    কেই দেখিতে পাই।
তাহার প্রশংসা করিলে পাপ মোচন হয় এবং পাপ হইতে  নিস্কৃতি লাভ হয় এই বলিয়া কুন্তপপ মন্ত্র সমাপ্ত হইল।
(কল্কি অবতার এবং মুহাম্মদ সাহেব-পৃ. ৬৫-৬৮)

তথ্যসূত্রঃ http://jubaerahmad.com/%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A7%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A7%80%E0%A7%9F-%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A8/