কিভাবে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করবেন?

কিভাবে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করবেন?:

প্রথমেই আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে, কোন কোন জায়গায় আপনি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। অর্থা‌ৎ, আপনার দুর্বলতার জায়গা কোনগুলি।
সবচেয়ে ভাল হয় যদি এগুলোকে তালিকার মত করে লিখে ফেলতে পারেন। দুর্বলতার পাশাপাশি নিজের শক্তির জায়গাগুলোও লিখুন।
হতে পারে আপনি আপনার কোনও বিশেষ আত্মীয় বা কর্মীর যে কোনও কথা মেনে নেন। তার অন্যায় আব্দারও না করতে পারেন না। হয়তো কোনও বিশেষ দলের খেলা থাকলে সব কাজ ফেলে সেই খেলা দেখতে বসে যান। হয়তো কোনও একটি বিশেষ খাবার বা রেস্টুরেন্টে খাওয়ার লোভ সামলাতে পারেন না।
দুর্বলতার জায়গাটি যত ছোটই হোক, লিস্ট করে ফেলুন। এরপর একটা একটা করে সেগুলোর ওপর কাজ করতে শুরু করে দিন। প্রথমে সবচেয়ে সহজ গুলো দিয়ে শুরু করুন। আত্মনিয়ন্ত্রণের জন্য আসলে আত্মনিয়ন্ত্রণের অভ্যাসটাই জরুরী।
প্রথম দিকে হয়তো এই প্রক্রিয়াটি আপনার কাছে কঠিন ও অস্বস্তিকর মনে হবে। হয়তো প্রথম কয়েকবার আপনি ব্যর্থ হবেন। কিন্তু আর সব জায়গার মত এখানেও “Practice Makes One Perfect” – কথাটি সত্য। কাজেই, দমে না গিলে প্রাকটিস চালিয়ে যান। একটা সময়ে ব্যাপারটি অনেক সহজ হয়ে যাবে।
কিছু মানুষ হয়তো আপনাকে অপছন্দ করা শুরু করবে। সামনে বা পেছনে আপনাকে একগুঁয়ে ডাকা শুরু করবে, কারন আপনি নিজের দায়িত্বের প্রতি স‌ৎ থেকে কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়া শুরু করেছেন। কিন্তু আপনি যখন বড় সাফল্য অর্জন করবেন, তখন এই মানুষগুলোই আপনাকে কাছে চাইবে। পরামর্শের জন্য আপনার কাছেই আসবে।
A silhouette of a strong man
আশপাশে এমন পরিবর্তন ঘটতে থাকলে বুঝবেন আপনি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করেছেন। এই পর্যায়ে কেউ আপনাকে একগুঁয়ে বললে সেটাকে প্রশংসা হিসেবে নেবেন। এর মানে আপনি নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেয়ার ও তা বাস্তবায়ন করার মানসিক শক্তি অর্জন করছেন। আপনি কোনও অবস্থাতেই আপোস করছেন না এবং কোনও পরিস্থিতিতেই হাল ছাড়ছেন না। সাফল্যের জন্য এগুলো খুবই জরুরী।
আর্ল নাইটএঙ্গেলের ভাষায়, অনেক টাকা আয় করা বা অনেক উপরের পর্যায়ে যাওয়াটাই সব সময়ে সাফল্য নয়। আপনি যে লক্ষ্য ঠিক করেছেন, সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে পারাটাই আসলে সাফল্য। আর লক্ষ্যে স্থির থাকার জন্য আত্মনিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই। সে কারনেই নিজের ওপর কঠোর হওয়ার ব্যাপারে এতটা জোর দেয়া হয়। আপনি যখন নিজের লক্ষ্য সিদ্ধান্তে অটল থাকার গুণ অর্জন করবেন, তখন অন্যরাও আপনার ওপর আস্থা রাখবে। আপনাকে অনুসরন করবে। যোগ্য নেতার সবচেয়ে বড় গুণ তো এটাই।

পরিশিষ্ট:

নেতৃত্ব সবাই দিতে পারে না। সবার নেতৃত্ব মানুষ মেনেও নেয় না। নেতা তারাই হতে পারে যারা মানুষের সাধারন দুর্বলতাকে জয় করতে পারে, অন্যদেরও শক্তিশালী হওয়ার স্বপ্ন দেখাতে পারে। নিজের নেতৃত্ব নিজের হাতে নেয়ার জন্য নিজের দুর্বলতা খুঁজে বের করুন, এবং এগুলোকে নিজের ভেতর থেকে দূর করুন। নিজের সাথে লড়াই করতে কখনও ভয় পাবেন না। কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়া একটি সাহস ও আত্মবিশ্বাস পূর্ণ কাজ। নিজের প্রতি কঠোর হতে পারা উন্নতি, সাফল্য ও নেতৃত্বের পথে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।এর মানে, আপনি নিজের গৌণ আনন্দ ও আরামের বদলে আপনার লক্ষ্যকে প্রাধান্য দিতে পারছেন। লক্ষ্য পূরণের জন্য শুধু এই একটি গুণ অর্জন করাই যথেষ্ঠ। একজন যোগ্য নেতা হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারলে, অন্যরাই আগ্রহী হয়ে আপনার সাফল্যের জন্য কাজ করবে।
লেখাটি পড়ে আপনার কি মনে হয়েছে, তা কমেন্ট করে আমাদের জানান। আপনার প্রতিটি মতামতই আমাদের জন্য অমূল্য। যদি মনে করেন এই লেখাটি পড়ে একজন মানুষও উপকৃত হবেন, তাহলে শেয়ার করুন। আমাদের সাথে থাকুন, সাফল্যের পথে প্রতিটি পদক্ষেপে লড়াকু আপনার সাথে আছে।

Post a Comment

কেমন লেগেছে পোস্টি? কমেন্টে জানান
website এ ১০ হাজার ++ বই আপলোড করা আছে,
Download কোনো সমস্যা হলে দ্রুত আমাকে কমেন্ট জানান, or msashohayeb12@gmail.com
করুন

Previous Next

সার্চ করুন ইচ্ছেমতো

Search results

نموذج الاتصال