ভারতশাসিত
কাশ্মীরের শ্রিনগরের একটি নিরাপত্তা চৌকিতে ভারতীয়
সৈন্যরা এক তরুণ কাশ্মীরিকে গুলি করে হত্যা করেছে।
আজ বুধবার এই ঘটনা ঘটে। এনিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও
কর্মকর্তা এবং ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে।
ফের শুরু হয়েছে ভারতবিরোধী আন্দোলন
।ভা
রতের কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনী জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি
গাড়ি চালাচ্ছিলেন। এই অঞ্চলের প্রধান শহর শ্রীনগরের
পশ্চিম উপকূলে দুটি চেকপোস্টে তাকে থামার জন্য সিগন্যাল
দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি তা উপেক্ষা করেছিলেন। এমন সময়
আবার পাশ দিয়ে সামরিক বাহিনীর একটি দল যাচ্ছিল
। নাশকতর আশাঙ্কা থেকেই তাকে গুলি করা হয়।
তাকে সতর্ক করার পরও না থামায় গুলি করেছে এক সেনা সদস্য।
তবে ওই তরুণের বাবা ও স্থানীয়দের দাবি পুরোপুরি উল্টো।
ভুক্তভোগীর বাবা গোলাম নবী শাহ পুলিশে দাবি নাকচ করে
দিয়ে জানান, তার ছেলে নিরাপত্তা চৌকি দিয়ে গাড়ি চলাচ্ছিলেন না।
সৈন্যরা প্রথমে তাকে থামায়। পরে তাকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে।
ফেরদৌসা নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সৈন্যরা তাকে
সিগন্যাল দিলেই ওই তরুণ গাড়ি থামিয়ে দেন। পরে
একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা তাকে কিছু বলেছিলেন
; যার জবাবে তিনি বলেছিলেন, তার জরুরি যাওয়া দরকার
। তারা তাকে যেতে দেয়। কিন্তু যখন গাড়িতে উঠছিলেন
, তখন তারা তাকে পিঠে গুলি করে। তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে
হত্যা করা হয়। কোনো অন্যায় করেননি ওই তরুণ।
এই ঘটনার খবর ওই গ্রামগুলোতে পৌঁছে গেলে শুরু
হয় আন্দোলন। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে
আসেন। শুরু হয় মুক্তির শ্লোগান। তারা এক হয়ে বলতে
থাকেন, ‘গো ইন্ডিয়া, গো ব্যাক’ এবং ‘উই ওয়ান্ট ফ্রিডম’।
ওই তরুণের মরদহে ফেরৎ নিতেও তারা বিক্ষেভ করেন।
তারা তরুণের মরদেহ কবর দেওয়ার জন্য ফেরৎ চান।
তবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ তার মরদেহ ফেরৎ দেয়নি।
বিক্ষেভ চলাকালে সরকারি বাহিনী গ্রামবাসীদের মিছিল
করতে বাধা দেয়। কিন্তু গ্রামবাসী চালিয়ে যায়। তারা সেনা
বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করেন। সরকারি বাহিনী
বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে শটগান থেকে গুলি এবং টিয়ার
গ্যাস নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে এখনো হতাহতের কোনো খবর
পাওয়া যায়নি। বিক্ষেভের পর থেকে কর্তৃপক্ষ ওই অঞ্চলের
মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে।
এদিকে, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় মার্চ মাসের শেষের
দিকে থেকে ভারতীয় বাহিনী এই অঞ্চলে কঠোর লকডাউন
ব্যবস্থা আরোপ করেছে। লকডাউন সত্ত্বেও ভারতীয়
বাহিনী কাশ্মীরে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। ধরছে
স্বাধীনতাকামীদের। আর এবার সরাসরি এক কাশ্মীরিকে গুলি করে হত্যা করেছে।
ভারত ও পাকিস্তান, প্রত্যেকে কাশ্মীরের দুটি অংশ শাসন
করে। তবে উভয়ই এই অঞ্চলটিকে পুরোপুরি দাবি করে
। এই অঞ্চলে বিভিন্ন অভ্যুত্থান এবং পরবর্তীকালে ভারতীয়
সামরিক বাহিনীর অভিযানে ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
সূত্র: এবিসি নিউজ।