প্রয়াত সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহর ছেলে প্রিন্স ফয়সাল বিন আবদুল্লাহ আল-সৌদকে গ্রেফতারের পর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় অন্তরীণ করে রাখা হয়েছে। শনিবার এক বিবৃতি দিয়ে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
রাজ পরিবারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে এইচআরডব্লিউ শনিবার জানায়, রাজধানী রিয়াদের উত্তর-পূর্বে একটি পারিবারিক ভবনে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সেল্ফ আইসোলেশনে ছিলেন প্রিন্স ফয়সাল। গত ২৭ মার্চ সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরায় প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ২০১৭ সালেও তথাকথিত দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের সময় রিয়াদের একটি বিলাসবহুল হোটেল থেকে ফয়সাল গ্রেফতার হন। পরে অবশ্য সৌদি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাবেক এই প্রধানকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এই প্রতিবেদন নিয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষের তরফে এখনও কোনো মন্তব্য করা হয়নি। গত মার্চে সৌদির ডি-ফ্যাক্টো নেতা ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশে রাজ পরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্য ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড় অভিযান শুরু হয়।
যুবরাজ সালমানের এই ধরপাকড় অভিযানে কিছুদিন আগে সৌদি রাজপরিবারের প্রভাবশালী সদস্য ও বাদশাহ সালমানের সবচেয়ে ছোট ভাই প্রিন্স আহমেদ বিন আব্দুল আজিজ এবং সাবেক ক্রাউন প্রিন্স ও দেশটির সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন নায়েফকেও গ্রেফতার করা হয়।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বাবা সৌদি বাদশাহ সালমানের মৃত্যুর পর ক্ষমতার পথ কণ্টকমুক্ত করতে যুবরাজ ক্রাউন প্রিন্স সালমান এই অভিযান শুরু করেছেন। তিনি ক্রাউন প্রিন্স হওয়ার পর থেকেই দফায় দফায় এই গ্রেফতার ও দমনাভিযান চলছেই।
২০১৮ সালে সৌদি রাজতন্ত্রের সমালোচক হিসেবে পরিচিত সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাসহ শত শত মানবাধিকারকর্মী ছাড়াও রাজপরিবারের সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়েছে তার নির্দেশে। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে ক্রাউন প্রিন্স সালমানের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে জোরালো।