ইসলাম হচ্ছে সিঙ্গেল মোস্ট পাওয়ারফুল রিলিজিয়ন ইন দ্য ওয়ার্ল্ড। এখন যদি একটা ধর্মভিত্তিক ডাইনেস্টি তৈরি করতে হয়, একমাত্র ইসলামের সেই এবিলিটি আছে, অন্য কোনো ধর্মের নেই। এর কারণ হলো–মুসলিমদের ধর্মীয় আবেগ। কেউ কেউ ধর্মীয় আবেগ বিষয়টাকে উপেক্ষা করতে চান। ধর্মীয় জ্ঞান আর ধর্মীয় আবেগকে মুখোমুখি দাঁড় করাতে চান। এই আলাপে আমি আগ্রহী না। ধর্মীয় জ্ঞান থাকা অবশ্যই জরুরী। কিন্তু ধর্মীয় জ্ঞান না থাকা ধর্মীয় আবেগের জন্য অন্তরায় হওয়াটা জরুরী না।
সাহাবাগণের ধর্মীয় আবেগ ছিলো অনেক বেশি। উমার (রা.) এর ঘটনা পড়লেই টের পাবেন। খুশির সংবাদ হচ্ছে, সেই জজবা সেই আবেগ এখনো বলবৎ আছে। মুসলিমদের যতই পদস্খলন হোক, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ভালোবাসায় কোনো খাদ নেই। এজন্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কটূক্তি করলে না তখন কা'ব বিন আশরাফরা বাঁচতে পেরেছে, না এখনো বাঁচতে পারছে। সাধ্যের মধ্যে সবটুকু রাসূলপ্রেমীরা করছে।
এখনো "ইয়া রাসূলুল্লাহ, আপনার জন্য আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক" বলে হাসিমুখে জীবন দিয়ে দেয়া ভাইয়েরা আছেন। এখনো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কটূক্তি করলে বিক্ষোভে ফেটে পড়া লাখো-কোটি মুসলিম আছে। এইযে ধর্মের প্রতি কমিটমেন্ট, এইযে আল্লাহ-নবী-কুরআনের প্রতি সীমাহীন ভালোবাসা, এইটাই ইসলামকে শক্তিশালী হিসেবে প্রমাণ করে।
অন্য ধর্মগুলোকে দেখবেন টলারেন্ট হতে হতে একদম ভোঁতা হয়ে গেছে। ক্রিশ্চিয়ানিটি নিয়ে, চার্চ নিয়ে, নান নিয়ে, বাইবেল নিয়ে এমনকি যিশুকে নিয়েও কতশত ট্রল, হাসিঠাট্টা হয়, কটূক্তি হয়, খ্রিষ্টানদের পাত্তা নেই। তারা তাদের প্রিন্সিপালে টিকে নেই, ধর্মীয় আবেগ চলে গেছে তলানীতে। আর এই সুযোগেই ইচ্ছেমত খ্রিষ্টান ধর্মকে সংস্কার করেছে পশ্চিম। এখন খ্রিষ্টান ধর্মের অস্তিত্ব বিলীন প্রায়। হিন্দু ধর্মকে নিয়েও কটূক্তি হয়, কিন্তু তাদের উল্লেখযোগ্য কোনো রেজিস্টেন্স নেই।
এই দিক থেকে মুসলিমরা সবচেয়ে শক্ত পজিশনে থেকেছে সবসময়। এজন্য ক্ল্যাশ অফ সিভিলাইজেশনে মুসলিম সভ্যতাকে পাশ্চাত্য সভ্যতার সবচেয়ে বড় থ্রেট হিসেবে দেখানো হয়। এজন্যই ইসলামকে সবচেয়ে বড় শত্রু বানিয়ে প্রোপাগান্ডা, যুদ্ধ, অপ্রেশন সব মুসলিমদের ওপর চাপানো হয়। সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করা হয় মুসলিমদের টলানোর। কিন্তু, মুসলিমদের রেজিস্টেন্স বলবৎ থাকে।
বিজেপি নেতা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে কটূক্তি করেছে, আরববিশ্ব ছাড় দেয়নি। বাংলাদেশেও কোনো কটূক্তিকারী ছাড় পায়নি। রক্তে সারাদেশ ভিজে গেছে, তবু মুসলমানরা ময়দানে গেছে বারবার। শ্লোগান দিয়েছে,
"আমার নবীর অপমান, সইবেনা রে মুসলমান!"
কখনো সইবেনা। এই আবেগ আমাদের শক্তি। এই আবেগকে সব শত্রু ভয় পায়। এজন্যই সপ্তম শতকে মুসলমানদের শত্রুরা বলে, "ওরা তলোয়ারের আগায় জান্নাত দেখে, ওদেরকে পরাজিত করা কীভাবে সম্ভব?" ঠিক ১৪০০ বছর পর এসেও আফগানিস্তানের মাটিতে রাশিয়ানরা বলে যায়, "ওরা বন্দুকের নলে জান্নাত দেখে, এমন শত্রুকে কীভাবে পরাজিত করা যায়?"
সময় গড়ায়, মুসলমানদের আবেগ, জজবা বদলায় না। এই আবেগ আমাদের বিজয়ের হাতিয়ার। স্বপ্ন দেখি, একদিন এই আবেগের ঘোড়ায় চড়ে বিজয় আসবে। কালিমার পতাকা জমিনে পতপত করে উড়বে।
নাসরুম মিনাল্লাহি ওয়া ফাতহুন কারীব।
লিখকঃ Asif Mahmud