আগামী সংসদ নির্বাচন ‘নিরপেক্ষ’ সরকারের অধীনে করার দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তা নাহলে কোনো নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না বলে সরকারকে হুঁশিয়ার করেছেন তিনি।
দুদিন আগে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে নির্দেশনা দিয়েছেন, তার প্রতিক্রিয়ায় এই হুঁশিয়ারি দেন বিএনপি মহাসচিব।
আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় যাওয়ার পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করলে দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি।
পরিবর্তিত ব্যবস্থায় আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলেও হেরে যাওয়ার পর কারচুপির অভিযোগ তোলে দলটি।
শনিবার মহিলা দলের এক সভায় ফখরুল বলেন, “উনি (শেখ হাসিনা) নির্বাচনের কথা বলেছেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। কোন নির্বাচন? যে নির্বাচন শুধু মাত্র আপনাকে নির্বাচিত করবে সেই নির্বাচন?”
আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না দাবি করে তিনি বলেন, “আমরা পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, নির্বাচন একটা হবে। সেই নির্বাচন অবশ্যই হতে হবে একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, সেই নির্বাচন হতে হবে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায়।
“আর সবার আগে গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে এবং একই সঙ্গে মুক্ত করতে হবে যারা কারাগারে আছেন। আর ৩৫ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা আছে সেই মামলাগুলোকে প্রত্যাহার করতে হবে। এর আগে কোনো নির্বাচন হবে না এদেশে।”
নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের উপর জোর দিয়ে ফখরুল বলেন, “আপনারা আইন করবেন পার্লামেন্টে যেখানে আর কেউ নেই, কথা বলার সুযোগ নেই বা আপনারা একরতফা আইন পাস করে নিয়ে যাবেন আপনাদের সুবিধার জন্য।
“সেই আইনের মধ্য দিয়ে যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হলে সেটাও এদেশের মানুষ মেনে নেবে না।”
বর্তমানে সর্বত্র দলীয়করণ চলছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, “আমরা কথা বলতে পারছি না, আমরা লিখতে পারছি না। আমাদের সাংবাদিক ভাইয়েরা তারা কখনোই বিনা ভয়ে কিছু লিখতে পারেন না। কারণ তাদেরকে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে ফেলা হয় অথবা তাদেরকে বিভিন্ন আইনে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়।”
এভাবে দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম হয়েছে বলেও দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।
বিএনপি গঠনের পর সহযোগী সংগঠন হিসেবে ১৯৭৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর জিয়াউর রহমান মহিলা দল প্রতিষ্ঠা করেন।
গণতন্ত্র ‘পুনরুদ্ধার’ আন্দোলনের জন্য মহিলা দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান ফখরুল।
সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘“আজকে শেখ হাসিনার পতন সকল সমস্যার সমাধানের পথ খুলবে। আসুন সেই এক দফায় এগিয়ে যাই।”
তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন গঠনে হয়তবা মতামত আমরা দেব। তবে আমি বলব, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে ফেরেস্তা এনেও যদি নির্বাচন কমিশন করা হয়, তারপরেও লাভ হবে না।”
মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সংগঠনের নেত্রী নেওয়াজ হালিমা আরলি, হেলেন জেরিন খান, ইয়াসমীন আরা হক, চৌধুরী নায়াব ইউসুফ বক্তব্য রাখেন।