পার্বত্য চুক্তি সম্পাদিত করার আসল উদ্দেশ্যে ছিলো, পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে চলমান থাকা সন্ত্রাসবাদ, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি, হত্যা, অপহরণ ও চাঁদাবাজি বন্ধ করে এ অঞ্চলে শান্তি-সম্প্রীত
এরই ধারাবাহিকতায় চুক্তির মৌলিক শর্ত হিসেবে সরকার জেএসএসকে পার্বত্য চুক্তির ঘ খন্ডের
১৩) মোতাবেক বলেন, "সরকার ও জনসংহতি সমিতি যৌথভাবে এই চুক্তি স্বাক্ষরের ৪৫ দিনের মধ্যে অস্ত্র জমাদানের জন্য দিন, তারিখ ও স্থান নির্ধারণ করিবেন। জনসংহতি সমিতির তালিকাভুক্ত সদস্যদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমাদানের জন্য দিন তারিখ ও স্থান নির্ধারণ করার জন্য তালিকা অনুযায়ী জনসংহতি সমিতির সদস্য ও তাহাদের পরিবারবর্গের স্বাভাবিক জীবনে প্রত্যাবর্তনের জন্যে সব রকমের নিরাপত্তা প্রদান করা হইবে।
১৪) নির্ধারিত তারিখে যে সকল সদস্য অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দিবেন সরকার তাহাদের প্রতি ক্ষমা ঘোষণা করিবেন। যাহাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা আছে সরকার ঐ সকল মামলা প্রত্যাহার করিয়া নিবেন।
১৫) নির্দিষ্ট সময় সীমার মধ্যে কেহ অস্ত্র জমা দিতে ব্যর্থ হইলে সরকার তাহার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবেন।"
বর্ণিত শর্ত মর্মে সরকার তাদের সব দাবিদাওয়া মেনে নিয়ে শুধুমাত্র তাদেরকে 'অবৈধ অস্ত্র' পরিহার করার নির্দিষ্ট সময়ে একটি শর্ত মোতাবেক তাগিদ দেন। দুঃখজনক, তাদের প্রতি চুক্তির ৪৫ দিনের মধ্যে অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার তাগিদ থাকলেও তারা 'অবৈধ অস্ত্র' পরিহার করে স্বাভাবিক জীবনেই ফিরে আসেনি। কিন্তু তারা চুক্তির সবধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে সরকারের সঙ্গে বেইমানি করেছে এবং চুক্তির মৌলিক শর্ত লঙ্ঘন করে দেশদ্রোহীতা ও বিশ্বাসঘকতা করেছে।
তারা অবৈধ অস্ত্র নিয়ে ১৯৯৭ সনের ২-রা ডিসেম্বরের পর থেকে বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে চাঁদাবাজির লক্ষ্যেই অপহরণ, হত্যা ও ধর্ষণ করে পার্বত্য জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলছে৷ তারা যে অপরাধ চুক্তির পূর্বে করতো সেই অপরাধ চুক্তির পরেও করছে। তারা পার্বত্য চুক্তির পর বিভিন্ন ধাপে ধাপেই রাষ্ট্রীয় সম্পদ, রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও উপজাতি-বাঙ্গালী
উপজাতি সন্ত্রাসীরা ২০০৭ সালে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন গাজীকে হত্যা করে রাঙ্গামাটি নানিয়ারচরে। ২০১৮ সালে জেলার রাজস্থলী উপজেলায় সেনাসদস্য মো. নাছিমকে হত্যা করে। আজকে আবার সেনা সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিব রহমানকে হত্যা করে তারা তাদের দুঃসাহস ও ধৃষ্টতা প্রদর্শন করেছে। এর মাধ্যমে তারা তাদের সক্ষমতার উপস্থিতি জানান দিয়ে পার্বত্য চুক্তিকে বৃদ্ধাঙ্গুল প্রদর্শন করেছে।
পূর্বে থেকে অসাংবিধানিক পার্বত্য চুক্তি নিয়ে বহু তর্ক-বিতর্ক হয়েছে।- ২-ই ফেব্রুয়ারি ২০২২ সেনা অফিসার হত্যার মধ্যদিয়েই পার্বত্য চুক্তি সম্পূর্ণ গ্রহণ যোগ্যতাও বৈধতা হারিয়েছে। পার্বত্য চুক্তি লঙ্ঘন করে রাষ্ট্র বিরোধীতা কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে জেএসএস সভাপতি সন্তু লারমাসহ জেএসএসের সকল সদস্যদের নামে আইনী পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। এই কাজ করতে সরকার বিলম্ব বা কালক্ষেপণ করলে অচিরেই তারা বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্ন করে আলাদা রাষ্ট গঠন করবেই। ইতোমধ্যে তারা আলাদা রাষ্ট গঠন করার জন্য কূটনীতিক তৎপরতা, ভারী অস্ত্র ও গোলাবারুদ এবং সদস্য সংখ্যা বহুগুণে বৃদ্ধি করেছে। আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী ও এনজিও, দাতাসংস্থা ও মিশনারীরা তাদেরকে সহায়তা করছে।
©#mrf